দৈনিক নতুন বাংলা : অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা মৌলিক চাহিদা নিয়েই আমাদের জীবন। শিক্ষা সকলের মৌলিক অধিকার। এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বিশ্ব মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তার সাথে সারা দেশে সাড়ে পাঁচ লক্ষ শিক্ষক/কর্মচারীও নিরলসভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এবার আসি ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে মূল ভূমিকা পালন করছেন শিক্ষক/কর্মচারী সমাজ। সেই শিক্ষক/কর্মচারদের মধ্যে সরার দেশের চৌষট্টি জেলায় প্রায় ৫৫০০০ তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিষ্ট্রেশন,অনলাইন ফরম পূরণ,শিক্ষকদের অনলাইন টিআইএফ,ইএফটি,অনলাইন বৃত্তি,উপবৃত্তি এন্ট্রি,আইএমএস জরিপ,প্রাইমারী জরিপ, শিক্ষকদের অনলাইন সাবজেক্ট নির্ধারণ,অনলাইন এমপিও আবেদন, টাইম স্কেল ও এমপিও সংশোধনযোগ্য আবেদন, এনটিআরসিএ এর অনলাইন শিক্ষক চাহিদাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় অনলাইন কাজ এই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরাই সূচারুরূপে করে যাচ্ছেন। যা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া ছাত্রী/ছাত্রীদের বেতন কালেকশন, কলামনার ক্যাশবুকসহ সরকার নির্দেশিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় রেজিস্ট্রার লেখা, যাবতীয় ফাইল,রেকর্ড পত্র সংরক্ষণ, এবং বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরাই করে থাকে। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের কাজের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। সারা দিন তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়েই চিন্তা করতে হয়। এ পদে চাকুরী করার কারণে তারা আজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। স্বল্প বেতনে চাকুরী করে বিধায় কারো চাহিদা পূরণ করতে না পারায় সমাজও তাদের অবহেলার চোখে দেখে। একজন গ্র্যাজুয়েশন করা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সারা দিন কাজ করেও মাত্র এগারো থেকে বারো হাজার টাকা বেতন/ভাতা পেয়ে থাকেন। যা দিয়ে মাসের দশ থেকে পনেরো দিন চলতে পারে। মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য তাদেরকে হাহুতাস করতে হয়। এতো পরিশ্রম করেও দৈনিক বেতন/ভাতা মাত্র ৩০০-৪০০ টাকা, যা একজন দিন মজুরের চেয়েও কম। দীর্ঘদিন ধরেই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের এ অবস্থা। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য ২০২০ সালের জুলাই মাসের চব্বিশ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী পরিষদ। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে গড়া পেশাজীবি সংগঠনে বর্তমানে ৫৮ টি পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ও ৪০০ শতাধিক থানা/উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ক্ষুধার যন্ত্রণায় ও বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তির জন্য আজ সারা দেশের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তি চায়। তাই সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, মাউশির মহাপরিচালক, শিক্ষা সচিব, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, জনপ্রশাসন সচিব, মহান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপির মাধ্যমে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছেন। সতের সেপ্টেম্বর 2021 তারিখে সাত শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করা হয়েছে।পাঁচ দফা দাবির পূরণের মাধ্যমে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চায়,ক্ষুধার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির মাধ্যমে মৌলিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে চায়। দাবী সমূহঃ ১। তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন গ্রেড ১১তম প্রদান করতে হবে এবং শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ২। পদের নাম পরিবর্তন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/অফিস সুপার প্রদান করতে হবে এবং পেশাগত উন্নয়নে কম্পিউটার সহ অন্যান্য বিষয়ে উচ্চতর ট্রেনিং এর দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ৩। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রণীত চাকুরীবিধি-২০১২ দ্রুত বাস্তবায়ন ও প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিতে কর্মচারীদের একজন সদস্য রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ৪। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দ্রুত উচ্চতর পদে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। ৫। সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। পাঁচ দফা দাবি পূরণের মাধ্যমে কর্মচারীদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে সহায়তা করার জন্য কর্মচারী জন্য সংগ্রাম কারী একমাত্র নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বিশ্ব মানবতার মা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আকুল আবেদন জানাই।
“বিনীত নিবেদক, মোঃ সোলায়মান হোসেন প্রামাণিক, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি।